আজ চৈত্র সংক্রান্তি। আজকের এই দিনটির বিদায়ী সূর্যটা নতুন বছরের শুভ বার্তা নিয়ে আসবে। ‘জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক, মুছে যাক গ্লানি...’ শুভ বার্তা নিয়ে আসুক নতুন বছর এই প্রার্থনা জানাবে বাঙালি জাতি।
রাত পোহালেই নতুন দিন। পূর্বদিগন্ত উদ্ভাসিত করে ভোরের নরম আলো রাঙিয়ে দেবে চরাচর, স্বপ্ন, প্রত্যাশা। নব সম্ভাবনায় সূচিত হবে নববর্ষ ১৪২৩।
বাংলা সনের সমাপনী মাস চৈত্রের শেষ দিনটি বাঙালির লৌকিক আচারের ‘চৈত্র সংক্রান্তি’। আজ ৩০ চৈত্র ১৪২২। বাংলা সনে বছরের শেষদিন। প্রকৃতির আকুল করা ফাগুন, চৈতালী হাওয়ায় উতল-উদাস করা যে বসন্ত তারও বিদায় আজ। বসন্ত মুখর হয়ে উঠেছিল তরুলতা, বিটপী আর বনস্পতিতে। এবারে ঋতুরাজ বসন্তের বড়ভাগ জুড়েই ছিল খরতাপ। তপ্ত দিনলিপিতে এবার বৃষ্টির শান্ত-শীতল পরশও জুটেছিল জনজীবনে। ঝড়-ঝঞ্ঝাও বাদ যায়নি।
সনাতনধর্মীদের কাছে চৈত্র সংক্রান্তি বিশেষ লোক উৎসব। নানা আচার-অনুষ্ঠান আর হালখাতার প্রস্তুতি নিতে এদিনকে বেছে নিয়েছেন তারা। চৈত্র সংক্রান্তি বাংলার লোক সংস্কৃতির এমন এক অনুষঙ্গ যা সর্বজনীন উৎসবের আমেজে বর্ণিল। হালখাতার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, আবৃত্তি, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হয় সংক্রান্তি। এ দিনে বিদায় উৎসব পালন করে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। দোকানপাট ধুয়ে-মুছে বিগত বছরের যত সব জঞ্জাল বিদূরিত করা হয়। পরদিনই খোলা হবে ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশের নতুন খাতা। উৎসবের লোকায়ত নাম ‘হালখাতা’। সারা বছরের খরিদ্দারদের কাছে বকেয়া টাকা তুলতে বছরের এই দিনটিকে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়ার রেওয়াজ বহু পুরনো।
এদিনে সন্ন্যাসীরা কিংবা সাধারণ লোকের কারও কারও শূলফোঁড়া, বাণফোঁড়া ও বড়শিগাঁথা অবস্থায় চড়কগাছে ঘোরাসহ প্রভৃতি ‘ভয়ঙ্কর’ ও দৈহিক কলাকৌশল দেখা যায়।
No comments:
Post a Comment