মানব দেহের জন্য দারুন উপকারী বীজ সমুহ ........................
সুস্থ্য থাকার জন্য আমাদের প্রতিদিন কিছু না কিছু খাবারের উপযোগী বীজ খাওয়া দরকার। কেননা খাবারের উপযোগী সব বীজেই শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাটি এসিড আছে। এ এসিডগুলি আমাদের কোষে সজীবতা দেয়।যে বীজগুলিতে ফ্যাটি এসিড বেশী আছে সে বীজগুলিকে পিষলে একটু আঠালো ভাব দেখা যায় যেমন তিসীর বীজ, তিল, মেথি বীজ, তাল মাকনা, মিষ্টিকুমড়ার বীজ, লাউ বীজ, কাচা চীনাবাদাম, তরমুজের বীজ, আমণ্ডবাদাম, কাজুবাদাম, ইত্যাদি। এছাড়া এসব বীজে ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক থাকে যা ফ্যাটি এসিডগুলিকে শরীরে পূর্ণমাত্রায় হজম হতে সাহায্য করে। যেহেতু বীজগুলি উদ্ভিদজাত তাই এগুলি রক্তের (কলেস্টেরল) ঘনত্ব বাড়ায় না। অপরদিকে প্রাণীজ চর্বি(স্থলে বাসকারী প্রাণী যেমন- গরু-ছাগল-হাস-মুরগী ইত্যাদি)অতিরিক্ত পরিমানে খেলে রক্তের ঘনত্ব বাড়িয়ে নানা ধরনের হার্টের রোগ সহ ক্যান্সার রোগ পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে আঁশহীন মাছের তেল শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ।আমাদের দেশের জন্য দরকার মাগুরমাছ, আইরমাছ, বোয়ালমাছ, রিঠামাছ, পাঙ্গাশমাছ, কিন্তু শীতপ্রধান দেশের জন্য দরকার স্যামন, কড, ট্রট, টুনা, হেরিং মাছি অর্থাৎ যেদেশে যা যা পাওয়া যায়, সেদেশে বসবাসকারী মানুষ সহ অন্যান্য জীবের জন্য সেগুলি উপকারী। এছাড়া সামুদ্রিক অন্যান্য হালাল মাছও একইভাবে উপকারী। কারন এগুলি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। এগুলি শুধু হার্টকেই সুস্থ্য রাখেনা, উপরন্তু শরীরকে ক্যান্সারমুক্ত রাখে বা যাদের ক্যান্সার আছে তাদের শরীরে ক্যানসারের বিস্তারকে রোধ করে। উপরের বীজগুলো খেতে থাকলে এবং একই সাথে মিষ্টিপানির ও সামুদ্রিক আঁশহীন মাছগুলি(ঋতু অনুযায়ী খেতে হবে)খেলে অনারোগ্য রোগীরাও এক সময় সুস্থ্যতা পায়। তারমানে কিছুতেই এটা নয় যে উপরের মাছগুলি ছাড়া অন্যসব মাছ অদরকারী। প্রকৃতিতে সবকিছুই আছে আমাদের কল্যাণের জন্য। কিন্তু জানতে হবে কখন কি খেতে হবে, কতটুকু খেতে হবে এবং কখন তা খেতে হবেনা। আগেকার লোকদের আজকের মত ঘরে ঘরে শিক্ষার বড় বড় ডিগ্রী ছিলনা কিন্তু তারা জানতেন কোন ঋতুতে কি খেতে হয়, কতটুকু খেতে হয়, কখন খেতে হয় এবং কি খেতে হয়না। তারা জানতেন কিভাবে প্রকৃতিকে অনুসরণ করে সুস্থ্য থাকা যায়।
তরমুজের বীজ খাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে তরমুজ খাওয়ার সময় মুখে যে কয়টা বীজ যায়, তা দাঁত দিয়ে ভাল ভাবে চিবিয়ে খেয়ে ফেলা। লাউবীজ, কুমড়ারবীজগুলি এসবের ভর্তা করে খাওয়া দরকার(যা ভাত দিয়ে খাওয়া যায়)। বিদেশে এসব বীজগুলিকে প্রক্রিয়াজাত করে খাওয়া হয়, কিন্তু এতে বীজগুলি হতে ততটা উপকার পাওয়া যায়না, যা আমাদের টাটকা তৈরী বীজ ভর্তাতে পাওয়া যায়। একই ভাবে পটল রান্না করার সময়, করলা রান্না করার সময় বেছে বেছে সেগুলির বীজ ফেলে দেয়া ভুল কাজ। প্রাণীদের মগজের খাবার হিসেবে যে গুরুত্ব, বীজের গুরুত্ব তার’চে অনেক বেশী। এ বীজগুলীকে উদ্ভিদজাত মগজ-ও বলা যায়। আমরা অনেক সৌভাগ্যবান যে আমাদের কাঁঠালের মত ফল আছে। আমাদের দেশের মাটিতে আখরোট, আমণ্ড, পেস্তা, খোবানি জন্মায় না, কিন্ত মাত্র কাঁঠালের বীজেই ঐসব নাট(বীজ হতে সৃষ্ট বাদাম) না হওয়ার ঘাটতি দূর করেছে। কাঁঠালের বীজের ভর্তা এবং মাছ-মাংসের সাথে বীজকে সবজী হিসেবে খাওয়া যায়। কাঁঠালের বীজে কি কি উপাদান আছে তার বিস্তারিত বর্ণনায়ে না যেয়ে এটুকু বলা যায় এটি উন্নতমানের উদ্ভিদজাত প্রোটিন। একই ভাবে যখন ডেউয়া ফল হয় তখন ডেউয়া ফল খেয়ে তার বীজকে পরবর্তীতে চিনাবাদামের মত ভেঁজে খাওয়া দরকার বা অন্যান্য বীজকে যেভাবে ভর্তা হিসেবে খাওয়া যায়, ডেউয়া বীজের ভর্তাও সেভাবে করা যায়। শীতের শেষে যখন শিমের বীজ পরিণত হয় তখন এ শিমের বীজ দিয়ে নানা ধরনের তরকারী রান্না করে খাওয়া দরকার। শিমের বীজ রান্না করার সময় সৌন্দর্য ও স্বাদের জন্য যেন বীজের খোসা ফেলে দেয়া না হয়। এ খোসাগুলি প্রাকৃতিক আঁশে পরিপূর্ণ। পরিমিত মাপে এ বীজের তরকারী খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। সব প্রাকৃতিক আঁশেরই কোষ্ঠকাঠিন্য সারানোর ক্ষমতা আছে। এখন যেকোন জিনিষের পরিমিত মাপ বলতে ততটাই সে জিনিষ খাওয়া দরকার, যতটুকু খেলে পেট ভার ভার না লাগে, বার বার পায়খানা না হয়।
যেসব বীজ ভাঙ্গলে আঠালো হয় তাদের মাঝে ফ্যাটি এসিড আছে। তিসীর তেলে ওমেগা-থ্রি আছে, যা দেহকোষের মাঝে যাবতীয় রাসায়নিক বিক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে হতে সাহায্য করে। ওমেগা-থ্রি, ওমেগা-সিক্স, ওমেগা- নাইন এসব কথার মর্মার্থ সবাই বুঝবে না, না বুঝলে ক্ষতিও কিছু নেই। কিন্তু এটা’ত সবাই বুঝবেন যে দুবেলা যদি এক টেবিল চামচ তিসীর তেল কাঁচা খেয়ে তারপর ভাত খান তাহলে দেখবেন দু-চারদিন পর থেকে তার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে ঠিকমত পায়খানা হচ্ছে(normal stool) এবং শরীরের হালকা ঝরঝরে অনুভুতি হচ্ছে। এটা পরীক্ষার করার জন্য কেবল একটা সপ্তাহ প্রয়োজন। তিসীর তেলে টিউমারসহ সবধরনের অবাঞ্ছিত কোষের বৃ