Sunday, June 11, 2017

মানব দেহের জন্য দারুন উপকারী বীজ সমুহ ........................


মানব দেহের জন্য দারুন উপকারী বীজ সমুহ ........................
সুস্থ্য থাকার জন্য আমাদের প্রতিদিন কিছু না কিছু খাবারের উপযোগী বীজ খাওয়া দরকার। কেননা খাবারের উপযোগী সব বীজেই শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাটি এসিড আছে। এ এসিডগুলি আমাদের কোষে সজীবতা দেয়।যে বীজগুলিতে ফ্যাটি এসিড বেশী আছে সে বীজগুলিকে পিষলে একটু আঠালো ভাব দেখা যায় যেমন তিসীর বীজ, তিল, মেথি বীজ, তাল মাকনা, মিষ্টিকুমড়ার বীজ, লাউ বীজ, কাচা চীনাবাদাম, তরমুজের বীজ, আমণ্ডবাদাম, কাজুবাদাম, ইত্যাদি। এছাড়া এসব বীজে ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক থাকে যা ফ্যাটি এসিডগুলিকে শরীরে পূর্ণমাত্রায় হজম হতে সাহায্য করে। যেহেতু বীজগুলি উদ্ভিদজাত তাই এগুলি রক্তের (কলেস্টেরল) ঘনত্ব বাড়ায় না। অপরদিকে প্রাণীজ চর্বি(স্থলে বাসকারী প্রাণী যেমন- গরু-ছাগল-হাস-মুরগী ইত্যাদি)অতিরিক্ত পরিমানে খেলে রক্তের ঘনত্ব বাড়িয়ে নানা ধরনের হার্টের রোগ সহ ক্যান্সার রোগ পর্যন্ত সৃষ্টি করতে পারে। অন্যদিকে আঁশহীন মাছের তেল শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ।আমাদের দেশের জন্য দরকার মাগুরমাছ, আইরমাছ, বোয়ালমাছ, রিঠামাছ, পাঙ্গাশমাছ, কিন্তু শীতপ্রধান দেশের জন্য দরকার স্যামন, কড, ট্রট, টুনা, হেরিং মাছি অর্থাৎ যেদেশে যা যা পাওয়া যায়, সেদেশে বসবাসকারী মানুষ সহ অন্যান্য জীবের জন্য সেগুলি উপকারী। এছাড়া সামুদ্রিক অন্যান্য হালাল মাছও একইভাবে উপকারী। কারন এগুলি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। এগুলি শুধু হার্টকেই সুস্থ্য রাখেনা, উপরন্তু শরীরকে ক্যান্সারমুক্ত রাখে বা যাদের ক্যান্সার আছে তাদের শরীরে ক্যানসারের বিস্তারকে রোধ করে। উপরের বীজগুলো খেতে থাকলে এবং একই সাথে মিষ্টিপানির ও সামুদ্রিক আঁশহীন মাছগুলি(ঋতু অনুযায়ী খেতে হবে)খেলে অনারোগ্য রোগীরাও এক সময় সুস্থ্যতা পায়। তারমানে কিছুতেই এটা নয় যে উপরের মাছগুলি ছাড়া অন্যসব মাছ অদরকারী। প্রকৃতিতে সবকিছুই আছে আমাদের কল্যাণের জন্য। কিন্তু জানতে হবে কখন কি খেতে হবে, কতটুকু খেতে হবে এবং কখন তা খেতে হবেনা। আগেকার লোকদের আজকের মত ঘরে ঘরে শিক্ষার বড় বড় ডিগ্রী ছিলনা কিন্তু তারা জানতেন কোন ঋতুতে কি খেতে হয়, কতটুকু খেতে হয়, কখন খেতে হয় এবং কি খেতে হয়না। তারা জানতেন কিভাবে প্রকৃতিকে অনুসরণ করে সুস্থ্য থাকা যায়।
তরমুজের বীজ খাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে তরমুজ খাওয়ার সময় মুখে যে কয়টা বীজ যায়, তা দাঁত দিয়ে ভাল ভাবে চিবিয়ে খেয়ে ফেলা। লাউবীজ, কুমড়ারবীজগুলি এসবের ভর্তা করে খাওয়া দরকার(যা ভাত দিয়ে খাওয়া যায়)। বিদেশে এসব বীজগুলিকে প্রক্রিয়াজাত করে খাওয়া হয়, কিন্তু এতে বীজগুলি হতে ততটা উপকার পাওয়া যায়না, যা আমাদের টাটকা তৈরী বীজ ভর্তাতে পাওয়া যায়। একই ভাবে পটল রান্না করার সময়, করলা রান্না করার সময় বেছে বেছে সেগুলির বীজ ফেলে দেয়া ভুল কাজ। প্রাণীদের মগজের খাবার হিসেবে যে গুরুত্ব, বীজের গুরুত্ব তার’চে অনেক বেশী। এ বীজগুলীকে উদ্ভিদজাত মগজ-ও বলা যায়। আমরা অনেক সৌভাগ্যবান যে আমাদের কাঁঠালের মত ফল আছে। আমাদের দেশের মাটিতে আখরোট, আমণ্ড, পেস্তা, খোবানি জন্মায় না, কিন্ত মাত্র কাঁঠালের বীজেই ঐসব নাট(বীজ হতে সৃষ্ট বাদাম) না হওয়ার ঘাটতি দূর করেছে। কাঁঠালের বীজের ভর্তা এবং মাছ-মাংসের সাথে বীজকে সবজী হিসেবে খাওয়া যায়। কাঁঠালের বীজে কি কি উপাদান আছে তার বিস্তারিত বর্ণনায়ে না যেয়ে এটুকু বলা যায় এটি উন্নতমানের উদ্ভিদজাত প্রোটিন। একই ভাবে যখন ডেউয়া ফল হয় তখন ডেউয়া ফল খেয়ে তার বীজকে পরবর্তীতে চিনাবাদামের মত ভেঁজে খাওয়া দরকার বা অন্যান্য বীজকে যেভাবে ভর্তা হিসেবে খাওয়া যায়, ডেউয়া বীজের ভর্তাও সেভাবে করা যায়। শীতের শেষে যখন শিমের বীজ পরিণত হয় তখন এ শিমের বীজ দিয়ে নানা ধরনের তরকারী রান্না করে খাওয়া দরকার। শিমের বীজ রান্না করার সময় সৌন্দর্য ও স্বাদের জন্য যেন বীজের খোসা ফেলে দেয়া না হয়। এ খোসাগুলি প্রাকৃতিক আঁশে পরিপূর্ণ। পরিমিত মাপে এ বীজের তরকারী খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। সব প্রাকৃতিক আঁশেরই কোষ্ঠকাঠিন্য সারানোর ক্ষমতা আছে। এখন যেকোন জিনিষের পরিমিত মাপ বলতে ততটাই সে জিনিষ খাওয়া দরকার, যতটুকু খেলে পেট ভার ভার না লাগে, বার বার পায়খানা না হয়।
যেসব বীজ ভাঙ্গলে আঠালো হয় তাদের মাঝে ফ্যাটি এসিড আছে। তিসীর তেলে ওমেগা-থ্রি আছে, যা দেহকোষের মাঝে যাবতীয় রাসায়নিক বিক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে হতে সাহায্য করে। ওমেগা-থ্রি, ওমেগা-সিক্স, ওমেগা- নাইন এসব কথার মর্মার্থ সবাই বুঝবে না, না বুঝলে ক্ষতিও কিছু নেই। কিন্তু এটা’ত সবাই বুঝবেন যে দুবেলা যদি এক টেবিল চামচ তিসীর তেল কাঁচা খেয়ে তারপর ভাত খান তাহলে দেখবেন দু-চারদিন পর থেকে তার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে ঠিকমত পায়খানা হচ্ছে(normal stool) এবং শরীরের হালকা ঝরঝরে অনুভুতি হচ্ছে। এটা পরীক্ষার করার জন্য কেবল একটা সপ্তাহ প্রয়োজন। তিসীর তেলে টিউমারসহ সবধরনের অবাঞ্ছিত কোষের বৃ

Saturday, May 6, 2017

জল দুধের বন্ধুত্ব.....।।।

জল দুধের সাথে বন্ধুত্ব করল এবং নিজের স্বরূপ ত্যাগ করে দুধের সঙ্গে মিশে গেল ।
এই দেখে দুধ জলকে বলল , "তুমি যেভাবে শুধু বন্ধুত্বের কারনে নিজের স্বরূপ ত্যাগ করে আমার সাথে মিশে গেলে , আমিও আমাদের বন্ধুত্ব পালন করব , আজ থেকে তুমিও আমার দামেই বিক্রি হ'বে !"
তাই দুধকে যখন ফোটানো হয় , তখন জল বলে , এবার আমার বন্ধুত্ব পালন করার পালা , তাই তোমার থেকে আগে আমি মৃত্যু বরণ করবো ! তাই জল আগেই শেষ হয়ে যায় !
যখন দুধ তার বন্ধু জলকে এভাবে মৃত্যু বরণ করতে দ্যাখে , তখন দুধ উথলে উঠে আগুনকে নেভানোর চেষ্টা করে , কিন্তু , যখন কিছু জলের ফোঁটা ছিটিয়ে তার বন্ধুকে উথলানো দুধের সাথে মিলিয়ে দেওয়া হয় , তখন দুধ আবার শান্ত হয়ে যায় !
কিন্তু …………………
এক ফোঁটা অম্ল সেই জল এবং দুধের নিবিড় বন্ধুত্বকে আলাদা করে দিতে পারে !
তাই বন্ধুত্বের মাঝে কখনোই "অম্লত্ব" আসতে দেবেন না , কারণ , সামান্য অম্ল গভীর বন্ধুত্বে ফাটল ধরাতে পারে !
কার কাছে কত কোটি টাকা আছে , কটা গাড়ী আছে , কটা মহল আছে সেটা বড় কথা নয় ………
দরকার তো দুটো রুটি , ………… আর জীবন তো একটাই ………… তাহ'লে কিসের অহংকার !
শুধু ভাবুন , আপনি কতটা সময় খুশীতে কাটিয়েছেন , আর কতজনকে খুশী বিতরন করতে পেরেছেন ।😘😊
✍ শোনার অভ্যাস করুন , কারণ , নিন্দা করার লোকের অভাব নেই ।
✍ হাঁসতে শিখুন , কারণ , কাঁদানোর জন্যে লোকের অভাব নেই ।
✍ ওপরে ওঠার চেষ্টা
করুন , কারণ , পা ধরে টেনে নামানোর লোকের অভাব নেই ।
✍ উদ্যমি হওয়ার চেষ্টা
করুন , কারণ হতোদ্যম করার লোকের অভাব নেই ।
✍ যিনি সত্যিকারের
মানুষ তিনি কখনোই নাস্তিক বা আস্তিক হন না , তিনি সবসময় বাস্তবিক হন …………
✍ ছোটো ছোটো কথা মনের মধ্যে ধরে রাখলে , বড় বড় সম্পর্কও
নষ্ট হয়ে যেতে পারে ।
✍ যদি আপনার আড়ালে আপনার কোনো সমালোচনা হয় , তো জানবেন আপনার কিছু ব্যক্তিত্ব নিশ্চয় আছে যার সমালোচনা হচ্ছে ।
✍ "নিন্দা" তারই হয়
যিনি বেঁচে আছেন , কারণ মৃত্যুর পর তাঁরই গুনগান করা হয় ।

Tuesday, April 18, 2017

শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতা এর অর্থ কি?

♥♥শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতা এর অর্থ কি?♥♥
♦♦শ্রীমদ অর্থ পবিত্র গ্রন্থ; ভগবদ্ অর্থ ঈশ্বর; গীতা অর্থ গান; ভগবদ্গীতার অর্থ হল ঈশ্বরের গান এবং শ্রীমদ্ হল এর বিশেষণ। এখন প্রশ্ন হতে পারে ভগবদ্গীতা ভগবান কৃষ্ণ, অর্জুনকে বলেছিলেন, তবেএকে গান বলা হয় কেন? কারণ, গীতার মিত্রাক্ষরছন্দ যখন সঠিক ভাবে উচ্চারণ করা হয় তখণ তা খুবই সুন্দর সুরেলা সঙ্গীত এর সৃষ্টি করে।গীতার এই ছন্দ কেঅনুষ্টুপ্ বলা হয় এবং এরপ্রতিটি শ্লোক ৩২ অক্ষর সমণ্বিত।
♪♪ শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতা যথাযথ অর্থ বা পরিচয় ভগবান কৃষ্ণ গীতাতে নিজেই বলে দিচ্ছেন-- রাজবিদ্যা রাজগুহ্যংপবিত্রমিদমুত্তমম্। প্রত্যক্ষাবগমং ধর্মংসুসুখং কর্তুমব্যয়ম্।।৯-২ "এই (গীতার)জ্ঞান সমস্তবিদ্যার রাজা, সমস্তগুহ্যতত্ত্ব থেকেওগুহ্যতর, অতি পবিত্র এবংপ্রত্যক্ষ অনুভূতিরদ্বারা আত্ম-উপলব্ধিপ্রদান করে বলে প্রকৃতধর্ম। এই জ্ঞান অব্যয়এবং সুখসাধ্য।"♪♪

Friday, March 24, 2017

জীবনের উদ্দেশ্য কি ???

প্রশ্ন- জীবনের উদ্দেশ্য কি ?
উওর - *জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে সেই চেতনাকে জাগ্রত করা - যেটা জন্ম এবং মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত আছে । সেটাকে জানাই হচ্ছে মোক্ষ.*.!!

প্রশ্ন- জন্ম আর মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত কে ?
উওর - *যিনি স্বয়ং নিজে ঐ আত্মাকে জেনে ফেলেছেন , তিনিই জন্ম ও মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছেন* ।

প্রশ্ন - সংসারে দুঃখ কেন আছে ?
উওর - *লোভ , স্বার্থ আর ভয়ই সংসারে দুঃখের মুখ্য কারন* ।

প্রশ্ন - ঈশ্বর কি দুঃখের রচনা করেছেন ?
উওর - *ঈশ্বর সংসার রচনা করেছেন আর মনুষ্য নিজের বিচার আর কর্মের দ্বারাই দুঃখ আর সুখের রচনা করেছেন* ।

প্রশ্ন -ঈশ্বর কি আছেন?কে উনি ?
উওর - *কারন ছাড়া কার্য হয় না । এই সংসার ঐ কারনেরই অস্তিত্বের প্রমান । তুমি আছো আর সেইজন্যই তিনিও আছেন । ঐ মহান কারনেকেই আধ্যাত্মের ভাষায় ' ঈশ্বর ' বলা হয়ে থাকে* ।

প্রশ্ন - এই জগতে সবচেয়ে বড় আশ্চর্য কি ?
উওর - *রোজ হাজারো লোকের মৃত্যু হচ্ছে এবং এটা সবাই দেখছে , তথাপি সবাই অনন্তকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করে - এরচেয়ে বড় আশ্চর্যের আর কি হতে পারে* ।

প্রশ্ন - ভাগ্য কি ?
উওর - *প্রত্যেক ক্রিয়া , প্রত্যেক কার্যের ই একটি পরিনাম থাকে । পরিনাম ভালও হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে । এই পরিনামই হচ্ছে ভাগ্য তথা আজকের প্রযত্নই কালকের ভাগ্য* ।

প্রশ্ন - কোন জিনিষকে হারিয়ে মানুষ ধনী হতে পারে ?
উওর - *লোভ*।

প্রশ্ন - জীবনে সুখী থাকার উপায় কি ?
উওর - *ভাল স্বভাব* ।

প্রশ্ন - কোন জিনিষ হারিয়ে গেলে দুঃখ হয় না ?
উওর - *ক্রোধ* ।

প্রশ্ন - ধর্ম ছাড়া এই সংসারে আরেকটি মূল্যবান জিনিষ কি ?
উওর - *দয়া* ।

প্রশ্ন - কোন জিনিষ অপরকে দেওয়া উচিৎ নয় ?
উওর - *কষ্ট ও বিশ্বাসঘাতকতা* ।

প্রশ্ন - কোন জিনিষ জীবকে সবকিছু করতে বাধ্য করায় ?
উওর - *নিরুপায় বা মজবুরি* ।

প্রশ্ন - এই দুনিয়ার সবচেয়ে অপরাজিত জিনিষ কোনটি ?
উওর - *সত্য* ।

প্রশ্ন - সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক কার্য কোনটি ?
উওর - *পরোপকার* ।

প্রশ্ন - দুনিয়ার সবচেয়ে স্বর্গীয় স্বপ্ন কি ?
উওর - *জীবের বেঁচে থাকার স্বপ্ন* ।

প্রশ্ন - দুনিয়ার সবচেয়ে অপরিবর্তনীয় জিনিষ কোনটি ?
উওর - *মৃত্যু* ।

প্রশ্ন - কোন জিনিষ জীব স্বয়ং বুঝতে পারেনা ?
উওর - *নিজের মুর্খতা* ।

প্রশ্ন - দুনিয়ার কোন জিনিষ কখনো নষ্ট হয় না ?
উওর - *আত্মা ও জ্ঞান* ।

প্রশ্ন - দুনিয়ার কোন জিনিষ কখনো থেমে থাকেনা ?
উওর - *সময়*।

Tuesday, August 23, 2016

ডি-টক্স ওয়াটার কী ?????

আমাদের দেশের কনটেক্সটে ডিটক্স ওয়াটার বা ইনফিউসড ওয়াটার শব্দটা একেবারেই নতুন। লোকে বলে এর সাহায্যে নাকি এক দুই সপ্তাহের মাঝে সব মেদ ঝরিয়ে ফেলা যায়, আবার অনেকে বলে এটা নাকি মসৃণ, উজ্জ্বল ত্বক দেয় চোখের নিমেষে। কিন্তু আসলে ডিটক্স ওয়াটার কী? আমার মতে মাঝে মাঝেই যেমন সৌন্দর্য জগতে একেকটা জোয়ার আসে, যাকে বলে Fad এটাও তেমনি কিছু একটা হতে চলেছে। সম্পূর্ণ ভাবে fad হয়ে যাবার আগেই আপনাদের এর ভালো, খারাপ সব দিক জানিয়ে দেবার উদ্দেশেই আজকের এই লেখা।

ডি-টক্স ওয়াটার কী?
ইনফিউসড ওয়াটার বা ডিটক্স ওয়াটার সাধারণত বলা হয় ঠাণ্ডা পানিতে যেকোনো ফল অথবা উপকারী হার্বস, সবজি বড় বড় করে কেটে বেশ খানিকক্ষণ ডুবিয়ে রাখলে যে মিশ্রণটা পাওয়া যায় তাকে। এই ফল বা সবজি ডুবানো পানি একদিকে হয় ফ্লেভারে ভরপুর আবার অন্যদিকে এতে থাকে না কোন সুগার বা ক্যালরি। যার কারণে প্রতিনিয়ত এটা পান করলে এটা আপনার মেদ দূর করা ও সুসাস্থ্যের অধিকারী হবার যুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে।

কীভাবে তৈরি করবেন ডি-টক্স ওয়াটার?
-ডিটক্স ওয়াটার আপনি একটা কাঁচের গ্লাসেও বানাতে পারেন আবার আড়াই লিটার পানির জগেও বানাতে পারেন। পরিমাণ নির্ভর করবে আপনি কত টুকু পান করবেন তার উপর। আপনি যদি চান আপনি আপনার রোজকার পানির চাহিদা ডিটক্স ওয়াটার দিয়েই পূর্ণ করবেন তাহলে কমপক্ষে আড়াই লিটারের জগ বা বোতল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া যেকোনো আকারের বোতল বা জগ আপনি আপনার ইচ্ছা মত ব্যবহার করুন। কিন্তু মনে রাখবেন বোতল বা জগ কাঁচের বা ফুড গ্রেড মেটালের হওয়া ভালো, কারণ আমরা সবাই জানি প্লাস্টিকের খারাপ প্রভাব সম্পর্কে। বদভ্যাস গুলো যতটা পারা যায় এড়িয়েই যান।

-পাত্রে আপনার ইচ্ছা মত বিশুদ্ধ পানি নিন। এতে এবার আপনার পছন্দের যেকোনো মৌসুমি ফল, সবজি (শশা, গাজর, লাউ, কুমড়া নয় কিন্তু) আর হার্বস কেটে পানিতে ঢালুন।

-এবার পাত্রটি কোন ঠাণ্ডা স্থানে বা ফ্রিজে রাখুন। এটা তৈরি হতে খুব বেশি হলে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লাগে আর এখন গরমের সময়ে আমাদের দেশে পানিতে ভেজান ফল পঁচে যাবার সম্ভবনা বেশি। এক্ষেত্রে ভালো হয় যদি রাতে ঘুমানোর আগে পানিটা রাখেন, এতে সকালে উঠেই আপনি তৈরি পাবেন আপনার ডিটক্স ওয়াটার। বাইরে রাখলেও সমস্যা নেই কিন্তু পঁচে যাবার ভয় এড়াতে তাড়াতাড়ি আপনাকে পুরোটা পান করে ফেলতে হবে। ফ্রিজে রাখলে ঠাণ্ডা ড্রিঙ্ক খেতেও ভালো লাগবে পঁচার ভয়ও থাকবে না।

-এরপর সারাদিন ধরে যখন খুশি তখন সাধারণ পানির জায়গায় এটা পান করুন।

-মনে রাখবেন পরের দিনের ডিটক্স ওয়াটার বানাবার জন্য একদিনের কাটা ফলের মধ্যেই আবার পানি দেবেন না যেন। এতে কোন উপকারই হবে না। কারণ এর মধ্যেই ঐ ফলের গুনাগুণ একবার পানিতে চলে গিয়েছে। ডিটক্স ওয়াটার তৈরির জন্য প্রতিদিন আপনাকে নতুন করে ফল কাটতে হবে।

কেন ডি-টক্স ওয়াটার পান করবেন?
আসুন এবারে জেনে নেই আসলে ডিটক্স ওয়াটার আমাদের সাস্থ্যের জন্য কী করতে পারে। ডিটক্স ওয়াটার মূলত ক্রাশ ডায়েটের অংশ। যেহেতু এতে ফলের ভিটামিন ও অন্যান্য গুনাগুণ আছে এবং কোন ক্যালরি নেই তাই ক্রাশ ডায়েটাররা সারাদিন এই পানি খেয়েই থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু এরকম ক্রাশ ডায়েটে যা হয়, সেই ডায়েটাররা ভীষণ পুষ্টিহীনতায় ভোগে। একারণে শুধু এই ডায়েটকে পুরোই ভিত্তিহীন বলা হয়। কিন্তু পরিপূর্ণ ডায়েটের অংশ হিসেবে ডিটক্স ওয়াটার বেশ উপকারী।
ডিটক্স ওয়াটার সুস্বাদু হবার কারণে এটা আপনার পানি পান অনেক বাড়িয়ে দেয়। যে কারণে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দ্রুত বেরিয়ে যায়।
প্রচুর পানি খাবার ফলে জাঙ্ক ফুড খাবার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এটা ফলের স্বাদ যুক্ত হবার কারণে আপনার সুগার ক্রেভিং বা মিষ্টি খাবার হারও কমিয়ে দেয়।
শরীরের ফ্যাট সেল গুলো নিষ্কাসনে সাহায্য করে।
খাবার হজমে সহায়তা করে ও শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ভালো রাখে।
ব্যায়াম করার জন্য যে মাসল ফ্যাটিগ বা শারীরিক অবসাদ তৈরি হয় তা দুর করে।
দ্রষ্টব্যঃ
উপরের এই কারণে আপনার অতিরিক্ত ওজন কিছুটা কমবে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় হবে। কিন্তু আপনি যদি মনে করেন শুধু ডিটক্স ওয়াটার আপনার শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় সব মেদ ঝরিয়ে ফেলতে সক্ষম তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। প্রথম প্রথম এর সেবনে আপনার শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে যাকে বলে ‘ওয়াটার ওয়েট’ কিন্তু সেই কমে যাওয়া ওজন কিন্তু মেদ নয়। আর এর ভরসায় ক্রাশ ডায়েটে যাবার ভুল আশা করি করবেন না।

আপনি ডিটক্স ওয়াটার পান করতে পারেন সুসাস্থ্যের জন্য কিন্তু এটা কোন জাদুর ছোঁয়ায় আপনাকে এক সপ্তাহে স্লিম ফিগার দেবে না। সেটা scientifically সম্ভবও নয়। বলাই বাহুল্য সেজন্য আপনার ওয়ার্ক আউট করা ও ক্যালরি ইনটেক কমানো ছাড়া আর কোন scientifically proven উপায় নেই।

কিছু জনপ্রিয় রেসিপিঃ
এবার দেখুন ডিটক্স ওয়াটারের কিছু সহজ রেসিপি। যার মাধ্যমে আপনি আজকে থেকেই এটা পান করা শুরু করতে পারবেন।

১। একটা আস্ত লেবু চাকা চাকা করে কাটুন। তার সাথে এক মুঠো পুদিনা পাতা পানিতে দিন সারারাত রেখে দিন। এটা সবচেয়ে সহজ ও অন্যতম কর্মক্ষম ওয়াটার রেসিপি। লেবু আর পুদিনা দুটোই ওজন কমাতে সাহায্য করে।


২।পাতলা স্লাইস করে একটা আপেল কেটে ফেলুন এবার এরসাথে এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া পানিতে মেশান। এই রেসিপিটা আপনার মেটাবলিসম হার বাড়াতে সাহায্য করবে।


৩।যতটা পারেন পাতলা চাকা চাকা করে একটা শশা আর একটা লেবু কেটে পানিতে মেশান। এই পদ্ধতি টা আমার নিজের খুব পছন্দ। খুবি রিফ্রেশিং ড্রিঙ্ক তৈরি হয়।


৪। আসছে আমের মৌসুম। এই রেসিপিটা কাঁচা আর পাকা দুই ধরনের আম দিয়েই করতে পারবেন।


একটা আম পাতলা ফালি করে কাটুন তার সাথে এক চামচ কুঁচি করে কাটা আদা পানিতে মেশান।


এছাড়াও আপনি আপনার পছন্দের যেকোনো ফল বা হার্বসের কম্বিনেশনে তৈরি করতে পারেন আপনার পছন্দের ডি টক্স ওয়াটার।